বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং এলাকায় দুটি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করার পর এই মন্তব্য করেন ব্লেক।
তার সঙ্গে কানাডার হাইকমিশনার বিনো পিয়েরে লারামি ও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিব্লেট ছিলেন।
এ সময় তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সম্প্রতি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মুখ থেকে সেখানকার সেনাবাহিনীর হত্যা-ধর্ষণ, দমন-পীড়নের বর্ণনা শোনেন।
অ্যালিসন ব্লেক বলেন, শিবির পরিদর্শন করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবস্থা জানা গেল। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা সে দেশে সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন। এ নির্যাতন গণহত্যার শামিল।
পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের তিন হাইকমিশনার বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতনের যে বর্ণনা শোনা গেল, তা অত্যন্ত নির্মম। আর এ সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও জোরালো করতে হবে।
তারা নির্যাতিত বিপুল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসাও করেন।
সকাল ১০টার দিকে তিন হাইকমিশনার কক্সবাজার থেকে সড়কপথে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে উখিয়া পৌঁছান। এরপর সেখানকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) এবং উন্নয়ন সংস্থা ‘এসিএফ’র স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। বেলা ১১টায় পৌঁছান ১০ কিলোমিটার দূরে উখিয়ার কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরে। এখানে টানা কয়েক ঘণ্টায় তারা (তিন রাষ্ট্রদূত) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সদ্য পালিয়ে আসা অন্তত ৩০ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন।
রাখাইন রাজ্যের খিয়ারিপ্রাং গ্রামে গত ২৮ ডিসেম্বর সেখানকার সেনাবাহিনী কর্তৃক বর্বর অত্যাচার, নির্যাতন, ধর্ষণ ও আগুনে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা এক রোহিঙ্গা নারী। ওই নারীও ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।
আরেক রোহিঙ্গা কামাল উদ্দিন বলেন, রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করতেই সেখানকার সেনা ও পুলিশ পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। যা এখনো চলমান আছে। রোহিঙ্গারা যেন দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে, সে জন্য বেছে বেছে মেয়েদের গণধর্ষণ ও শিশুদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে কয়েক হাজার রোহিঙ্গার ঘরবাড়ি। বাংলাদেশে আশ্রয় না পেলে রোহিঙ্গাদের নাফ নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মরতে হতো।
রোহিঙ্গা নবী হোসেন, সানা উল্লাহ ও মদিনা বেগম বলেন, কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরে তারা মাস দেড়েক ধরে অবস্থান করলেও এ পর্যন্ত কোনো ত্রাণ বা সাহায্য-সহযোগিতা পাননি তারা। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।
এই কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবু ছিদ্দিক বলেন, গত ৯ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যের তিনটি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় সেখানকার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে। এরপর থেকে গত চার মাসে (অক্টোবর-ফেব্রুয়ারি) রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশপাশের অন্তত ২৩টি গ্রাম থেকে ৯০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা উখিয়া ও টেকনাফ পালিয়ে আসে।
এর মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা এই কুতুপালং অনিবন্ধিত শিবিরে এবং ৪০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। আরো ১০ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের দিকে চলে গেছে।
তা ছাড়া এই দুটি শিবিরে কয়েক বছর আগে থেকে অবস্থান করছে আরও অন্তত দেড় লাখ রোহিঙ্গা। রাখাইন রাজ্যে দমন-পীড়ন অব্যাহত থাকায় গতকাল পর্যন্ত রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত ছিল।
দুপুর ১টার দিকে তিন হাইকমিশনার যান পাশের কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে। ১৯৯১ সাল থেকে এই শিবিরে অবস্থান করছে প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী।
রাষ্ট্রদূতেরা প্রথমে এই শিবিরের একটি স্কুল পরিদর্শন করেন। ওখানে রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠদান পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) ছাইলাউ মারমা, কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ইনচার্জ মো. শামশুদ্দোজা, উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের প্রমুখ।
শিবির পরিদর্শন শেষে তিন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
কানাডার হাইকমিশনার বিনো পিয়েরে লারামি বলেন, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মানবাধিকার রক্ষায় এ সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় একযোগে কাজ করা উচিত।
অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনার জুলিয়া নিব্লেট বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে নিজের দেশে ফিরতে পারে, আর নির্যাতনের শিকার না হয়, তার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে আরও জোরালো উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
গত ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি উখিয়া ও টকনাফের চারটি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে কফি আনান কমিশনের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
৩১ জানুয়ারি উখিয়া ও টেকনাফের দুটি শিবির পরিদর্শন করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সা বার্নিকাট।
- চকরিয়ায় প্যারাবন নিধনের মামলায় আসামি নিরীহ মানুষ
- পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
- চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে নারীসহ তিনজন গ্রেফতার
- মেরিন ড্রাইভ সড়কে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত
- চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফর সাঈদি সহ আওয়ামী লীগের ২৮৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় নতুন মামলা
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস থেকে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার, বিক্রেতা গ্রেফতার
- দুর্নীতির আখড়ায় কক্সবাজার সিটি কলেজ
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- বদরখালী সমিতির ১১টি মৎস্য প্রকল্পের নিলাম নিয়ে বিরোধ
- রামুতে আপন ভাতিজিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি
- রামুতে ল্যাপটপ পেলেন ৮০ নারী ফ্রিল্যান্সার
- চকরিয়া সদরের বক্স রোড সম্প্রসারণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ
- বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে গেলেন পদত্যাগ করা বিতর্কিত অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম
- চকরয়ার ঠিকাদার মিজান গ্রেফতার, কোটি টাকার ঋণের জেল-জরিমানার দায়ে
- কক্সবাজার আবাসিক হোটেলে ৭০ ইউপি সদস্যের ‘গোপন বৈঠক’, আটক ১৯
- চকরিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় : কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে
- চকরিয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ২টি ডাম্পার ও স্কেভেটর জব্দ
- চকরিয়ার সাবেক এমপি জাফর আলম, সালাহউদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের ৭৩৬ জন আসামী
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- উত্তপ্ত রামু সরকারি কলেজ: অধ্যক্ষ মুজিবের অপসারনের দাবিতে কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনে তালা
- কুতুবদিয়ায় গর্তে ১০ লক্ষ মণ পুরাতন লবন,লোকসানের শংকা চাষীরা
- পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
পাঠকের মতামত: